রাজনীতির আঙ্গিনায় ক্রিমিনাল দের প্রবেশ ও আধিপত্য বিস্তার
গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ভারতীয় নাগরিকদের উপর অন্ধকার জগতের কালো ছায়ার প্রলেপ গণতন্ত্র শব্দ টিকেই কলুষিত করেছে।
এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর, রঘুরাম জি রাজন দ্বারা রচিত একটি বই এর কথা আমি উল্লেখ করি, যার নাম ছিল “আমি করি যা করি” এবং তিনি বলেছিলেন, “আমাদের দেশ রাজনীতিতে বেশ কয়েক জন ভাল লোকের অভাবে ভুগছে।
আমরা প্রায়ই কিছু মানুষ মধ্যবিত্ত শ্রেণী থেকে দেখতে পাই যাদের উত্থান যারা এই পূতিগন্ধময় বাহুবলীদের দ্বারা গঠিত গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে পরিষ্কার ও শুদ্ধ করতে এগিয়ে আসেন সাধারন মানুষকে এই পরিবেশ থেকে বাইরে আনার চেষ্টা আপ্রাণ চেষ্টা করেন।
কিন্ত দুঃখের বিষয় এই যে সচরাচর এটাই দেখা যায় যে সাধারণত ক্রিমিনাল জগতের ওপার থেকে – মধ্যবিত্ত পেশাজীবীরা, যারা রাজনীতিকে পরিষ্কার করতে চান, সেই সব ভাল মানুষ যখন নির্বাচনের প্রতিদ্বন্ডিতার জন্য দাঁড়ান, তারা সাদা কালোর টাকার জোরের ও বাহুবলীদের দাপটের ও নানা যান্ত্রিক অযান্ত্রিক অনায্য কৌশল এর কাছে পরাস্ত হন ও কখনো বা তাদের জমানতও হারাতে হয়।
শিক্ষিত সচেতন জনমনে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠে ভোটারদের সচেতনতার অভাব কি সত্যিই সরকারকে পরিষ্কার করার পথ রুদ্ধ করছে ? ইতিপূর্বে আমরা লোকপাল নিয়োগের বিষয়ে শুনেছিলাম যার আইনের আওতার বিস্তারে অনেক ক্ষমতা দেওয়া থাকবে এবং শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতাও না কি থাকবে যার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিসর অনেক পরিশিলিত হবে ও ক্রিমিনাল প্রবেশের পথ বন্ধ হবে।
রাজনৈতিক ও সামাজিক কুফল সমূহকে যত দুর সম্ভব পরিত্যাগ সুনিশ্চিত করতে এগিয়ে আসতে হবে জনগনকেই যাতে লোকপাল নিয়োগের পথ বাস্তবে রূপ পায়। সামাজিক কুফল যথা বাহুবলদ্বারা সমাজ ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে ঘুষ,কাট মানি ইত্যাদির প্রকোপ বৃদ্ধি করেই কিছু স্বতন্ত্র / গোষ্ঠী / রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষীরা সরকারের নামে এই কাজ করে চলেছে এবং আমরা স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ের থেকেই যার অভিজ্ঞতা আমরা অর্জন করে আসছি।
ভোটাধিকার প্রয়োগ করে, জনগণ কেবল রাজনৈতিক দলের রঙ বদলাচ্ছে কিন্ত সামাজিক ব্যাতাবরন দূষণ মুক্ত করে স্বচ্ছ রাজনীতি আনয়ন সম্ভব পর করা যাচ্ছেনা ও জনগনকে প্রাপ্য সুবিধা দেওয়ার পরিবর্তে বরং সরকারী দায়বদ্ধতার রাস্তার মানচিত্র ক্রমশ সরু হয়ে উঠেছে।
তথাকথিত আধুনিকায়নের নামে স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতোই দুটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র সঠিক দিশা পাচ্ছে না যদিও যার আলাদা গুরুত্ব পাওয়া উচিত এবং অবশ্যই গণতান্ত্রিক বিকাশে সু শাসনের জন্য আদর্শ রোডম্যাপ থাকা উচিত।
কিন্ত ভারতবর্ষের মতো বিশাল দেশে দুর্ভাগ্য ক্রমে, শক্তিশালী রাজনৈতিক লবিগুলি অপরাধী ঘনত্ব দ্বারাই নিরবচ্ছিন্ন ভাবে আধিপত্য বজায় রেখেছে।।
অতিরিক্ত পরিচালক (প্রাক্তন) অ্যাডভাইসর স্বামী বিবেকানন্দ গ্রুপ অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউশনস, কনসালট্যান্টস্কিল উন্নয়ন – 2 ডাব্লু ।
সম্পাদনা – অমিত গুপ্ত
[…] […]