জি 24 আওয়ার ডিজিটাল ব্যুরো: তারা নিজেদের ‘ঘোস্টবাস্টার’ হিসেবে পরিচয় দেয়। বাংলায় ব্যাপারটা একটু ভাঙলেই দাঁড়ালো — ‘পাকদাও’ তে ওসব ভূত ঘুরে বেড়ায়। পোশাকের ভাষায়, তারা নিজেদেরকে ‘অতিপ্রাকৃতের গোয়েন্দা’ বলে পরিচয় দেয়। তাই তাদের এই শহরের ভূতের গোয়েন্দাও বলা হয়। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ তাদের কাজের অবকাঠামো উন্নয়নের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেন।
রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে ‘ডিটেকটিভস অফ সুপারন্যাচারাল’-এর দল তাদের কাজের পরিচয় দিয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন যে তার কাজ আসলে সংস্কারমূলক। অনেকে জ্ঞাতসারে বা অজান্তে কিছু কুসংস্কারে বিশ্বাস করে, ভয় পেয়ে যায়, মানসিক রোগে ভোগে, দৃশ্যের অপব্যাখ্যা করে। সুপারন্যাচারাল টিমের গোয়েন্দাদের কাজ এখান থেকেই শুরু হয়। তারা জনগণের এই সংস্কার ভাঙে, মানুষের ভয় ভাঙে। সম্প্রতি, তিনি এই বিষয়ে একটি প্রচারণাও করতে যাচ্ছেন- ‘ভয়ের উপরে উঠুন’। মানুষের মন থেকে ভয়ের ছায়া দূর করে তাদের কর্মে যুক্তির আলো জ্বালিয়ে দিতে হবে। তবে কাজটা একটু ভিন্ন। যে কারণে তাদের কাজে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়। আবার কিছু যান্ত্রিক সমস্যা আছে। সেই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে সে সব সমাধান জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে তিনি তার দলের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। তবে চিঠির নীচে ‘প্রতিষ্ঠাতা ও রাষ্ট্রপতি’ দেবরাজ সান্যাল এবং ‘পরিচালক’ ইশিতা দাস সান্যালের নাম রয়েছে।
আরও পড়ুন: আদালতে এক রাত! ভূতের সঙ্গে রাত কাটানোর আবেদন হাইকোর্টে…
এর আগে তিনি ভূত পরীক্ষার জন্য মাননীয় কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান বিচারপতির কাছে করা আবেদনে বলা হয়েছিল যে তিনি ‘হান্ট হাউস’ নামে পরিচিত কলকাতা হাইকোর্টে একটি রাত কাটাতে চান। একটি বিশেষ ঘরে থাকতে চান। প্রতিটি বাড়ির নাম ‘দুর্থনাম’ বলতে শোনা যায়। সেখানে তারা তাদের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভূত পরীক্ষার এই কাজটি করবেন। একটু পরিবর্তন হয়েছে কিনা দেখবেন!
তারা তথাকথিত ভূতের কি ব্যাখ্যা দেয়?
তিনি বলেন, যেসব জায়গায় প্রচুর বিদ্যুৎ সঞ্চারিত হয় বা যেখানে কাছাকাছি মোবাইল টাওয়ার আছে সেখানে ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয়, যা মানুষকে হ্যালুসিনেশনের শিকার হতে ঠেলে দেয়। যদি এর উপরের অংশটি ভিজা হয়ে যায়, তবে এই ক্ষেত্রটি আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। এর উপর নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট স্থানের বাসিন্দাদের মানসিক অবস্থা, অর্থাৎ তাদের অবচেতন মনের অবস্থা। অবচেতন মন মানুষটিকে দেখাতে চায় সে যা দেখতে চায় না, কিন্তু ঘটনার ধারায় সে সারাক্ষণ কী ভাবছে। এসব যোগাযোগ সচল হয়ে উঠলে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ সেখানে ‘ভূত দেখেছে’!
তাহলে কি ভূত বলে কিছু নেই? ভূত নিয়ে তাদের কি হবে?
‘ডিটেকটিভস অফ সুপারন্যাচারাল’ অবিশ্বাসের কিনারা ছাড়ে না। তারা বলেন, যেসব অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে তারা কাজ করেন, সেখানে ভূত বা অন্য কোনো জাতীয় চেতনা থাকলে স্বাভাবিক রেকর্ডিংয়ের বদলে ভিন্ন কিছু আসবে ওইসব যন্ত্রপাতিতে। এই ধরনের পরিবর্তন, যা সেই মুহূর্তে স্বাভাবিক এবং অস্বাভাবিক, ঘটলেও তারা নিজেদের কিছু বলে বিশ্বাস করে! আবার অনেক দিন ধরে অনেক জায়গার ভূত ভেঙেছে।